সবার উপরে ‘মানুষ’ প্রিয় হোক
মিজান বিন মজিদ:
ধরেন, আপনি একটা বিড়ালকে খুব ভালোবাসেন। অথবা আপনার শখের একখানা বাইক আছে যার প্রতিটি প্রত্যঙ্গে আপনার অনিঃশেষ প্রেম! কিংবা পথপার্শ্বপরি একটি বৃক্ষ যার প্রতি আপনার অপার অনুরাগ। এইসব স্বাভাবিক। এই সকল জিনিসপত্র দিয়েই আপনার জগতে আনন্দ আসে,আকাশে বাতাসে ভাসে আপনার তৃপ্তি। আমার এই নিয়ে নেই অভিযোগ, নাই আক্ষেপ।
কিন্তু এইসব বস্তু অবস্তুর মোহে পড়ে যদি কোন মানুষের প্রতি অজাচার করে বসেন! তখন ঘোর আপত্তি আমার। মানুষের চেয়ে ‘পিপড়া’ বড় গল্পে জাফর ইকবাল লিখলেও,আমি মানি না। মানি না,আপনি জন্তুতে জানোয়ারে আহ্লাদী হবেন,আদিখ্যেতা দেখাবেন আর বিপন্ন মানুষের কোন খোঁজ রাখবেন না..তা হয় না। অতএব, আপনি জ্ঞানী হতে পারেন,পণ্ডিত হতে পারেন;সমাজ সংসার আপনাকে মাথায় তুলে নর্তন কুর্দন করতে পারে,আপনি আমার কাছে অবাস্তব, অবান্তর ও অপ্রাসঙ্গিক।
লক্ষ করলে দেখবেন, আমি যত কথায় লেখি তার কেন্দ্রীয় বিষয় শুধুই মানুষ। কী শুভেচ্ছা জ্ঞাপন কী মৃত্যুর বর্ণনা অথবা ব্যবচ্ছেদ সবই মানুষ কেন্দ্রিক। আমি প্রবলভাবে বিশ্বাস করি, “মানুষ ঠিক হয়ে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে।” কেউ কেউ আলাদা করে এইটা ওইটাকে বিখ্যাত হবার উপাদান করে। আরে ভাই, তুমি যেসব নিয়ে মরছো,তার জন্য আলাদা বিভাগ আছে! তাদের কাজ কেন তুমি অযথ করতে গেলে? বরং মানুষ ধরো…
“মানুষ ধরো মানুষ ভজ,শোন বলিরে পাগল মন,মানুষের ভেতরে মানুষ করিতেছে বিরাজন।”
আমৃত্যু মানুষ আমার আধেয় থাকবে। আধারও তাই। সে কী উচ্চতর অবস্থানে না নিচে তা উপেক্ষা করবো। বরং কর্মে নিষ্ঠায় নিয়মে যিনি উজ্জ্বল আমি তার পায়ে পড়বো। পদ পদবী বংশ গোত্র ডিগ্রি এইসব তোমার মতন না বুঝলেও নিজের মতন বুঝি! জ্ঞান কম মানি,অজ্ঞান ভাববার কারণ দেখি না!
পশ্চিমের পশুপ্রীতি,লাল/সাদা চামড়ার অবান্তর কৌলিন্য প্রথা,সনাতনী দাদাগিরি ছেড়ে পথে আসুন। আমি আপনার সঙ্গ নেব। আপনি আমায় সঙ্গে নিয়ে ধন্য করুন,জনাব।
মিজান বিন মজিদ
সহকারী অধ্যাপক,
মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ, টাঙ্গাইল